কবুতর নিয়ে যত পশ্ন

শান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত কবুতর মনুষ্য হৃদয়ে কতটুকু শান্তি প্রদান করে তা বলা না গেলেও জাতের ভিন্নতায় চোখের প্রশান্তি যথেষ্টই যে প্রদান করে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা।সেই চিঠি আদান প্রদানের যুগ থেকে শুরু করে বর্তমানের আধুনিক যুগেও কবুতরের প্রতি ভালো লাগা এখনও যে কমেনি তা বলায় বাহুল্য।আর কবুতরের প্রতি এই ভালো লাগা থেকেই কবুতর নিয়ে যত প্রশ্নের উদ্ভব।
কবুতর নিয়ে যত প্রশ্ন


তবে এখন শুধু চোখের প্রশান্তির শখ থেকেই যে কবুতর পালন সীমাবদ্ধ্য তা কিন্তু নয় বরং বানিজ্যিক ভাবেও কবুতর পালন বিস্তার লাভ করছে ক্রমাগত।আর তাই কবুতর নিয়ে জানার আগ্রহের যেন শেষ নেই আমাদের মাঝে।কবুতর আমাদের অতি পরিচিত হলেও এর সম্পর্কে ধারণা খুব ই কম।তাই আজ আমরা কবুতর নিয়ে যত প্রশ্ন আছে আমাদের মনে সে সম্পর্কে ইনশাআল্লাহ।

সূচিপত্রঃ কবুতর নিয়ে যত প্রশ্ন 

ভূমিকা

কবুতর মূলত পাখির অন্তর্গত।ইংলিশ এ পিজন নামের এই পাখিটিকে শুদ্ধ বাংলায় পায়রা,পারাবত সহ আর বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।কর্ডাটা পর্বের Columbiformes বর্গের কবুতরের বৈজ্ঞানিক নাম Columba livia domestica।কবুতর পালনে ঝামেলা খুব একটা বেশি নয়।এদের মূলত রৌদ্রুজ্জ্বল এবং শুষ্ক স্থানে রাখতে হয়।খাবার হিসেবে দানাদার এবং শস্য জাতীয় খাদ্য সরবারহ করতে হয়।

এদের সাধারণত খাঁচা বা খোপের মধ্য রাখতে হয়।তাছাড়া খেয়াল রাখতে হবে যেন কবুতরের থাকার জায়গায় পানি প্রবেশ করতে না পারে।অথবা স্যাঁতসেঁতে না থাকে।কবুতরের রোগ বালাইয়ের দিকে খেয়াল রেখে অবশ্যই ঠিকমতো ঔষধ,ভিটামিন এবং ভ্যাক্সিন দিতে হবে।সে যাহোক কবুতর সম্পর্কে আমাদের মনে নানান প্রশ্ন থেকে থাকে।তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কবুতর নিয়ে যত প্রশ্ন তার উত্তরসংক্রান্ত কিছু তথ্য।

পৃথিবীতে কত প্রজাতির কবুতর আছে

পৃথিবীতে কবুতরের প্রজাতির সংখ্যা অনেক।বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রায় ১২০-২০০ প্রজাতির কবুতর আছে।আর বাংলাদেশে প্রায় ২০-৩০ প্রজাতির কবুতরের দেখা মেলে।কবুতরের বিভিন্ন জাতের মধ্য রয়েছে হোমার,গোলা,সিরাজী,কিং,গিরিবাজ,লাক্ষা ইত্যাদি।

কবুতরের বৈশিষ্ট্য

জাত অনুযায়ী কবুতরের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।এদের মধ্যে রং,পালক,গঠন ইত্যাদিতে রয়েছে ভিন্নতা।কবুতর মূলত দানাদার খাদ্য যেমন গম,ভুট্টা,শস্যদানা ইত্যাদি খেয়ে থাকে। কবুতরের জাত ভেদে ওজনের ও তারতম্য দেখা যায়।এরা সাধারণত দুইটি করে ডিম দেয় এবং ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পর ৭ দিন পর্যন্ত খাবার হিসেবে পিজন মিল্ক খাওয়ে থাকে।এটি মূলত ছেলে এবং মেয়ে কবুতর উভইয় উৎপাদন করতে সক্ষম।

কবুতরের জাত

কবুতরের অসংখ্য জাত রয়েছে।তন্মদ্ধ্য কিছু উল্লেখযোগ্য জাত হলোঃ
  • গোলা
  • রেসার
  • রোলিং
  • কাগজী
  • গিরিবাজ
  • মুসলদম
  • জালালী
  • পটার
  • বিউটি হোমা
  • লক্ষা
  • সিল্ভার কিং
  • সার্টিন
  • ম্যাগপাই
  • ভিক্টরিয়া ক্রাউন
  • মুন্ডিয়ান
  • নিকোবার
  • জ্যাকোবিন ইত্যাদি।

কবুতরের শারীরিক গঠন

কবুতরের শারীরিক গঠনের বিভিন্নতা রয়েছে।কোনটার পালকের রং লাল,সাদা,কালো,কোনটার পালকের রং মিশ্রিত থাকে।কবুতর এর পালককে পর ও বলা হয়।তাছাড়া কোনো কোনো কবুতর এর মাথায় ঝুটি ও দেখা যায়।কবুতর এর চোখের রং ও বিভিন্নরকম হয়ে থাকে।মাথা থেকে গলা পর্যন্ত কিছুটা ফুটবল এর মতো হয়ে থাকে।তাছাড়া সবরকম কবুতর এর ই চলাফেরাগত আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়

নানা জাতের কবুতর রয়েছে লালন পালন এবং পোষার জন্য।শখের বসে হোক কিংবা বাণিজ্যিক উদ্দ্যেশে সকলেই চান অল্প সময়ে লাভবান হতে।আর তাই অনেকেই জানতে চান কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে।আমাদের বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং পরিবেশ অনুযায়ী সাধারণত গিরিবাজ কবুতর বেশি ডিম এবং বাচ্চা দিয়ে থাকে।তবে মনে রাখতে হবে কবুতর এর যথাযথ ভাবে ডিম ও বাচ্চা দেওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার এবং সঠিক পরিবেশ।

কবুতরের বাচ্চা হলে কি করনীয়

কবুতর ডিমে তা দিতে শুরু করার প্রায় উনিশ দিনের দিকে বাচ্চা ফোঁটায়।তাই এ সময় ডিমের দিকে নজর দিতে হবে।বাচ্চা জন্মের পর তার বাসস্থান সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।বাচ্চা ফোঁটার ৭ দিন পর্যন্ত ছেলে এবং মেয়ে উভই কবুতরে গ্রন্থী থেকে উৎপন্ন পিজন মিল্ক বাচ্চাকে খাওয়ে থাকে।তাই আ সময় বাড়তি বাচ্চাকে বাড়তি খাবার দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
তবে ৭ দিন অতিক্রম হলে বাচ্চাকে অবশ্যই বাড়তি খাবার প্রদান করতে হবে।এবং খেয়াল রাখতে হবে খাঁচার বাইরে থাকা কবুতর যেন বাচ্চাকে আক্রমন করতে না পারে।

কবুতর ডিম দেয় না কেন

অনেক সময় দেখা যায় দীর্ঘ দিন হয়ে গেলেও বা কবুতরের বয়স অনেক হয়ে গেলেও কবুতর ডিম দিতে চাইনা।এই সমস্যার বেশ কিছু কারণ রয়েছে যেমনঃ
  • সুষম খাদ্যর অভাব
  • ডিম প্রদানে অক্ষম
  • বাসস্থানের সমস্যা
  • কোনো রোগাক্রান্ত
  • পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব ইত্যাদি।

সারকথা

পরিশেষে বলা যায় কথায় আছে যত্ন করলে রত্ন মেলে।আর তাই শখের কবুতর এর সাথে সখ্যতা গড়তে কবুতর সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়ে লালন পালন করা শুরু করলেই খুব সহজেই সফলতা ধরা দিবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা।আজ এ পর্যন্তই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে লাইক এবং শেয়ার করবেন বলে আশা রাখি।
ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪