ডিপ্রেশন কী - ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়
  বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা।যা ১৮-৩৫ বছর
  বয়সীদের মাঝে প্রকট আকার ধারণ করেছে।
  অনেকের ধারণা ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা মানেই হলো মন খারাপ।তবে মন খারাপ ডিপ্রেশনের
  একটা কারণ হলেও সামান্য মন খারাপকেই ডিপ্রেশন বলা যায় না।
পোস্ট সূচীপত্রঃডিপ্রেশন কী - ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়
- ভূমিকা
- ডিপ্রেশন কী
- ডিপ্রেশনের লক্ষণ
- ডিপ্রেশন হলে কি কি সমস্যা হয়
- ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়
- ডিপ্রেশন এর চিকিৎসা
- ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির আমল
- সারকথা
ভূমিকা
     বিশেষজ্ঞদের মতে, মন খারাপ যদি অন্তত সপ্তাহ দুইয়ের বেশি সময় ধরে চলতে
    থাকে তবেই তাকে ডিপ্রেশন বলে ধরা যাবে।ডিপ্রেশন মূলত একটি মানুষিক সমস্যা যা
    একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে।
  
  ডিপ্রেশন কী
                  ডিপ্রেশন একটি মেন্টাল ডিজঅর্ডার বা মানুষিক বিপর্যের একটি
                  নাম।যা সুস্থ জীবনকে বাধাপ্রাপ্ত করে।
                
                
                                দীর্ঘ সময় মন খারাপ,বিষন্নতা,অসুখী
                                মনোভাব,আত্ববিশ্বাস কমে যাওয়া ইত্যাদিই হলো
                                ডিপ্রেশন বা ডিপ্রেশনের নিয়ামক।বিশ্ব স্বাস্থ্য
                                সংস্থার মতে ২০৩০ সাল নাগাদ ডিপ্রেশনের ভয়াবহতা
                                প্রকট আকার ধারণ করবে।সমগ্র বিশ্ব পর্যালোচনা করলে
                                দেখা যায় ইতোমধ্যে ডিপ্রেশনের প্রভাব ভয়াবহ রুপ
                                ধারণ করেছে যা আত্মহত্যার বাড়ানোর জন্য বড়রকমের
                                দ্বায়ী।
আরো পড়ুনঃকালো জিরা খাওয়ার উপকারিতা -অপকারিতা
                            ডিপ্রেশনের লক্ষণ
                  শুধুমাত্র মন খারাপ দেখেই যে একজন ব্যক্তি ডিপ্রেশনে ভুগছেন
                  এমনটা নয়।বরং ডিপ্রশনে ভুগতে থাকা ব্যক্তির মাঝে মন খারাপ ছাড়াও
                  আরও বেশ কিছু লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়।
                
                যেমনঃ
                      - হীনমন্যতাঃডিপ্রেশনেরএকটি অন্যতম লক্ষণ হলো হীনমন্যতায় ভুগতে থাকা।দীর্ঘসময় নিজের মধ্যে হীনমন্যতার প্রভাব দেখা যেতে পারে।
- নিজেকে তুচ্ছ মনে করাঃনিজেকে তুচ্ছ মনে করা ডিপ্রেশনের আরেকটি লক্ষণ।যা রোগীর ক্ষেত্রে সংবেদনশীল হয়ে থাকে।
- আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলাঃডিপ্রেশনে আক্রান্ত ব্যক্তি যে কোনো কাজেই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। যা দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে।
- নিদ্রাহীনতাঃনিদ্রাহীনতা বা অনিয়মিত ঘুম ডিপ্রেশনের একটি সাধারণ লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
- খিটখিটে মেজাজঃডিপ্রেশনে আক্রান্তই ব্যাক্তির মেজাজ প্রায়শই খিটখিটে হয়ে থাকে।
- খাদ্যভাসে পরিবর্তনঃখাদ্যভাসে পরিবর্তন ডিপ্রেশনের এমন একটি লক্ষণ যেখানে কারো কারো ক্ষেত্রে যেমন অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়, তেমনি কারো ক্ষেত্রে এর সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র ও দেখা দিতে পারে।
- চুপচাপ থাকাঃডিপ্রেশনে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে চুপচাপ থাকতে চাওয়ার প্রবণতা অত্যাধিক।
- কোলাহল এবং জনসমাগমএড়িয়ে চলাঃকোলাহল এবং জনসমাগম ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকা ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট কষ্টের কারণ অনুভবের সৃষ্টি করে।বিধায় তারা এমন পরিবেশ এড়িয়ে চলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
- অন্ধকারের প্রতি ঝোঁকঃডিপ্রশনে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে আলোহীন পরিবেশ অর্থাৎঅন্ধকার পরিবেশে থাকতে চাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
- সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগাঃযেহেতু একজন বিষন্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায়শই অন্যমনষ্ক থাকেন আর তাই তারা ছোট ছোট কাজেও সিদ্ধান্তহীনতাই ভুগতে থাকেন।
ডিপ্রেশন হলে কি কি সমস্যা হয়
                    ডিপ্রেশন নিয়ে উদাসীনতা পুরো পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত অত্যাধিক
                    বললেই চলে।
                  
                  
                    আবার অনেকে এ বিষয়ে জানলেও এর থেকে কী কী সমস্যা হতে পারে সে
                    সম্পর্কে যথেষ্টভাবে অবগত নন।তবে আসুন আমরা জেনে নিই ডিপ্রেশনে
                    একজন মানুষের কী কী সমস্যা হতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
                  
                  
                    আরো পড়ুনঃকালো জিরা খাওয়ার উপকারিতা -অপকারিতা
                  
                  
                    ডিপ্রেশন যদিও মানুষিক একটি বিষয়।অর্থাৎ এটি একজন মানুষের
                    মানুষিক প্রশান্তিকে বিনষ্ট করার সাথে সাথে সাধারণ অগ্রগতিকে
                    প্রতিহত করে।তবে এই ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকা একজন মানুষের শুধু
                    মানুষিক প্রশান্তি বা সাধারণ অগ্রগতিই প্রতিহত হয় না বরং
                    এর সাথে সাথে শরীরেরও যথেষ্ট এবং
                    ভয়াবহরকম ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে।যা ডায়াবেটিস, প্রেসার,কিডনির
                    সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের ও কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
                  
                  ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়
                    কিছু সময় ধরে চেষ্টা করলে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি মেলে সহজেই।
                  
                  
                    ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির নানাবিধ উপায় রয়েছে। তবে সবচেয়ে
                    কার্যকরী উপায় হলো নিজ থেকে ডিপ্রেশন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা
                    করা।এছাড়াও রয়েছে ধর্মীয় অনুশাসন-বিধিবিধান মেনে চলা,
                    চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রতিদিনের
                    রুটিনের কিছু পরিবর্তন।
                  
                  ডিপ্রেশন এর চিকিৎসা
                    ইতোমধ্যে ডিপ্রেশনে ভুগছেন এমন রোগীদের জন্য অনতিবিলম্বে এখান
                    থেকে বের হয়ে একটা সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের পথে অগ্রসর হওয়ার
                    চেষ্টা করা উচিৎ। যার পদক্ষেপসরূপ কিছু নিয়ম অনুসরণ করা যেতে
                    পারে।
                  
                  যেমনঃ
                  
                    পর্যাপ্ত ঘুমঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম শরীর ও মনের
                    ক্লান্তি দূর করতে সক্ষম। সেই সাথে মন কে করে তুলে প্রফুল্ল।
                  
                
                    ব্যায়াম করাঃপ্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা সুন্দর
                    শরীরের সাথে সাথে মনকেও উৎফুল্ল করে থাকে।
                  
                
                    সকালে হাঁটার অভ্যাস করাঃসকালের সতেজ আবহাওয়া শরীর ও মনে জন্য
                    অত্যান্ত কার্যকরী, আর তাই সকালে হাঁটার অভ্যাস তৈরী করতে হবে।
                  
                
                    ★সকলের সাথে মেশাঃনিজেকে গুটিয়ে না রেখে বরং সকলের সাথে
                    মিশতে পারা উচিৎ। এতে মন অনেক হাল্কা থাকে যা ডিপ্রেশন থেকে
                    দূরে রাখতে সক্ষম।
                  
                
                    পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহনঃপুষ্টিকর খাদ্য শরীরে ভিটামিনের
                    প্রয়োজনীয়তা মেটায় বিধায় তা মনকেও উৎফুল্ল রাখে।
                  
                
                    আত্মবিশ্বাসী হওয়াঃনিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসিবে গড়ে তোলা
                    ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকার একটি অনন্য উপায়।
                  
                
                    ★নতুন নতুন কাজ করাঃনিয়ম করে একইধরনের কাজ একঘেয়েমির
                    সৃষ্টি করতে পারে।আর তাই চেষ্টা করতে হবে নিজেকে নতুন নতুন
                    কাজের সাথে সম্পৃক্ত করার।
                  
                
                    ★ইতিবাচক চিন্তাভাবনাঃইতিবাচক চিন্তাভাবনা একজন মানুষকে
                    একদিকে যেমন চিন্তামুক্ত রাখে ঠিক তেমনি বিষন্নতা থেকেও দূরে
                    রাখে।
                  
                
                    ★নেতিবাচক মানুষদের থেকে দূরে থাকাঃযেসকল মানুষদের সঙ্গ
                    মন খারাপ করায় বা নিজেকে ছোট অনুভব করায় এমন মানুষদের থেকে
                    পারতপক্ষে দূরে থাকতে হবে।
                  
                
                    ★মেডিটেশনঃমেডিটেশন ডিপ্রেশন দূর করার একটি অনন্য উপায়।
                  
                
                    ★নীতিনৈতিকতা মেনে চলাঃসামাজিক এবং নীতিনৈতিকতা মেনে
                    চলার প্রভাব ব্যক্তি জীবনে ব্যাপক।যা ডিপ্রেশন ও দূর করে খুব
                    সহজেই।
                  
                
                    ★ডাক্তারের পরামর্শঃডিপ্রেশন হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন
                    হতে হয় না এটি একটি ভুল তথ্য।বরং ডিপ্রেশন মেজর আকার ধারণ করলে
                    অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করা উচিৎ। কিছু ক্ষেত্রে
                    কাউন্সিলিং ডিপ্রেশন থেকে বের হতে খুব সহজেই সহায়তা করে।
                  
                
                    ★ক্যাফেইনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাঃক্যাফেইনযুক্ত খাবার
                    অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে অনেক সময় অবসাদসহ শরীরের নানা সমস্যার
                    সৃষ্টি করে।তাই ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকতে ক্যাফেইনযুক্ত খাবার
                    থেকে যতটাসম্ভব দূরে থাকতে হবে।
                  
                
                    ★নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকাঃধুমপান এবং নেশাজাতীয়
                    দ্রব্য থেকে যতটাসম্ভব দূরে থাকতে হবে কারণ এসব দ্রব্য
                    ডিপ্রেশনকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
                  
                
                    ★পছন্দের কাজ করাঃভালো লাগে এমন সব কাজ করতে হবে।হতে
                    পারে বই পড়া,বাগান করা ইত্যাদি।
                  
                  ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির আমল
                                    ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে যে কেবল বিভিন্ন
                                    ধরণের চিকিৎসায় কার্যকরী তা কিন্তু নয়।সেই
                                    সাথে ধর্মীয় অনুশাসন, নীতিনৈতিকতা মেনে চলা ও
                                    বেশ কার্যকর। বিশেষত ইসলাম ধর্ম মতে ডিপ্রেশন
                                    বা বিষন্নতা থেকে বেঁচে থাকার চমৎকার সমাধান
                                    রয়েছে।যেমনঃ
                                  
                                  
                                    ★অতিরিক্ত রাত না জেগে, পর্যাপ্ত ঘুম
                                  
                                  ★পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়
                                  ★জিকির্ করা
                                  
                                    ★নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করা
                                  
                                  
                                  ★অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার
                                  ★দূরদ পাঠ
                                  
                                    ★নিজের যে অবস্থান রয়েছে তার চেয়ে নিচের
                                    অবস্থানের মানুষদের প্রতি দৃষ্টিপাত করা
                                  
                                  
                                    ★সৃষিকর্তার প্রতি সুধারণা পোষণ ইত্যাদি
                                  
                                  
                                    পরিশেষে বলা যায়,একবিংশ শতাব্দিতে এসেও আমরা
                                    অনেকেই বিষন্নতা বা ডিপ্রেশনকে তেমন গুরুত্ব
                                    দেইনা যা আমদের অসচেতনতার কারন।তাই আমাদের এবং
                                    ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা চিন্তা করে একটী সুস্থ
                                    জিবনের লক্ষ্য আমাদের প্রত্যকের সচেতন হওয়া
                                    একান্ত জরুরি।
                                  
                                সারকথাঃ
      আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপক্রিত হবেন।আপনাদের শারীরিক সুস্থতার
      প্রত্যাশা রেখে আজ এ পর্যন্তই।
    
    -ধন্যবাদ
  
 
 
 
 
 

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url